২০২৩ সালের রমজান মাস কবে?
সাওম আরবী শব্দ এর ফারসি প্রতিশব্দ হলো রোজা । এর আভিধানিক অর্থ হল বিরত থাকা । ইসলামের শরীয়তের পরিভাষায় সুবহে সাদিক থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের আশায় নিয়তের সাথে পানাহার ইন্দ্রিয় তৃপ্তি এর পাশাপাশি যেকোনো অশ্লীল এবং খারাপ কাজ থেকে বিরত থাকা । ( ২০২৩ সালের রমজানের সময় সূচি )
সহজ কথায় আমরা বুঝতে পারি মহান আল্লাহ তা'আলার সন্তুষ্টি লাভের জন্য সূর্য ওঠার আগ পর্যন্ত থেকে সূর্য অস্ত যাওয়ার সময় পর্যন্ত যেকোনো ধরনের খারাপ কাজ এবং পানাহার থেকে বিরত থাকাই হলো সাওম বা রোজার মূল উদ্দেশ্য । ( রোজা আর কত দিন আছে )
ইসলাম পাঁচটি খুটির উপর প্রতিষ্ঠিত তারমধ্যে সাওমের অবস্থান তৃতীয়তম । এজন্য আমাদেরকে সাওম থেকে বিরত থাকা যাবেনা । সেহেতো মহান আল্লাহ তাআলা সাওমকে আমাদের উপর ফরজ করে দিয়েছে সেহেতু রোজা বা সাওমকে আমাদের অবশ্যই পালন করতে হবে কেবলমাত্র আল্লাহপাকের সন্তুষ্টি লাভের জন্য ।
( 2023 সালের রোজা কবে )
সাওমের ধর্মীয় ও সামাজিক গুরুত্
সূরা আল বাকারা , আয়াত ১৮৩ মহান আল্লাহ তা'আলা বলেছেন তোমাদের উপর সিয়াম রোজা ফরজ করা হয়েছে যেমন করা হয়েছিল তোমাদের পূর্ববর্তীদের
উপর । অর্থাৎ সাওম কেবল আমাদের উপরে ফরজ নয় বরং পূর্বের সকল নবী রাসূলের এবং উম্মতের উপর ফরজ ছিল । সাওমের মাধ্যমে মানুষের মনের তাকওয়া ও আল্লাহর প্রতি ভালোবাসা সৃষ্টি হয় । ক্ষুধা ও তৃষ্ণায় কাতর হয়ে ও মানুষ মহান আল্লাহর ভালোবাসা ও ভয়ে কিছুই পানাহার করে না ও ইন্দ্রিয় তৃপ্তি করে না । ( সাওমের গুরুত্ব )
দীর্ঘ একমাস সিয়াম সাধনার ফলে সমাজের লোকদের মাঝে পারস্পরিক সহানুভূতি ও সহমর্মিতা সৃষ্টি হয় । সাওম পালন করে এরূপ ব্যক্তি ক্ষুধার্ত থাকার ফলে সে অন্য আরেকজন অনাহারীর ক্ষুধার জ্বালা সহজেই বুঝত পারে । এতে অসহায় এবং নিম্ন মানুষের প্রতি সহানুভূতি ও সহমর্মিতা ভাব জাগ্রত হয় । আরে জন্য ধনী মানুষ দরিদ্র অসহায়দের ক্ষুধার যন্ত্রণা বুঝতে পেরে তাদেরকে খাদ্য দান করে । যার কারন বলা যেতে পারে সাওম মানুষকে দানশীলতা আগ্রহী হতে শেখায় ।
( মৌলিক ইবাদত কাকে বলে )
সাওম পালনকারীর ব্যক্তি অন্যায় এবং অশ্লীল কথাবার্তা পরিহার করে চলে এর পাশাপাশি হানাহানি থেকেও দূরে থাকে । যার ফলশ্রুতিতে সমাজে বিরাজ করে শান্তি । অধিক স্বভাব পাওয়ার আশায় একে অপরকে ইফতার করায় এবং অভাবীকে আর্থিকভাবে সহযোগিতা করে । এতে পরস্পরের মধ্যে ভ্রাতৃত্ববোধ সৃষ্টি হয় এবং সামাজিক বন্ধন আরও মজবুত ও শক্তিশালী হয় । ধনী এবং গরীব এর মধ্যে ভালো সম্পর্ক সৃষ্টি হয় । সাওম পালনের মাধ্যমে দৈহিক মানসিক ও আত্মিক প্রশান্তি অর্জিত হয় । ( সাওমের পরিচয় ও আহকাম )
ধর্মীয় দিক থেকেও সাওম অনেক গুরুত্ব রয়েছে । সাওম চলাকালীন সময়ে সৎকাজের প্রতিদান আল্লাহ তাআলা বাড়িয়ে দেয় এবং এই উদ্দেশ্যে তিনি স্বয়ং বুখারী হাদিসে বলেছেন সাওম আমার জন্য আমি নিজেই এর প্রতিদান দেবো । যেহেতু সওয়াবের আশায় আল্লাহর উদ্দেশ্যে সাওম পালন করা হয় সেহেতু আল্লাহ তাআলা রোজাদারের পূর্বের সকল গোনাহ ক্ষমাা করে দেন । এটি একটি মৌলিক ফরজ কাজ যদি কেউ এটিকে অস্বীকার করে তাহলে সে কাফের হয়ে যাবে ।
( কোন ইবাদতের প্রতিদান আল্লাহ নিজ হাতে দিবেন )
রমজান মাসের রোজা পালন করার ফলে মহান আল্লাহতায়ালা মুমিনদের পূর্বের সকল গুনাহ মাফ করে দেয় । এ বিষয়ে আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ সা: বলেছেন যে ব্যক্তি আল্লাহর প্রতি বিশ্বাস ও সওয়াবের আশায় রমজানের রোজা রাখে আল্লাহ তা'আলা তার পূর্বের সমস্ত পাপ ক্ষমা করে দেন । এর পাশাপাশি রোযদারের শরীরে যদি কোন রোগ থেকে থাকে তাহলে রোজা রাখার ফলে মহান আল্লাহ তাআলা তাকে শারীরিক এবং মানসিক সুস্থতা দান করে দেন । ( সাওম কত প্রকার )
2022 সালের শবে বরাত কত তারিখে ?
2023 সালের প্রথম রোজা কোন তারিখে হবে এটা যদি নির্দিষ্ট করে বলা যায় তাহলে 2023 সালের শবে বরাত কোন তারিখে হবে এটা নির্ণয় করা অনেক সহজ হবে । বাংলাদেশসহ বিভিন্ন উপমহাদেশ দেশগুলোতে রমজান শুরু হওয়ায় ঠিক 15 দিন আগে শবে বরাত পালিত হয়ে থাকে । ( ২০২৩ সালের রমজান কত
তারিখ )
শবে বরাতের দিন প্রতিটি মুসলমান সারারাত আল্লাহ তাআলার সন্তুষ্টি লাভের জন্য এবাদত করে কাটিয়ে
দেয় । শবে বরাতের রাত্রে মহান আল্লাহ তায়ালার সন্তুষ্টি লাভের জন্য যে নামায আদায় করা হয় এটিকে নফল নামাজ বলা হয়ে থাকে । রমজান শুরু হওয়ার ঠিক 15 দিন পূর্বে শবে বরাতের নামাজ আদায় করা হয় । ( ২০২৩ সালের রোজার ঈদ কত তারিখে )
শবে কদর কত তারিখে 2023
প্রতিটি ঈমানদারগণ এবং মুসলমানদের কাছে লাইলাতুল কদর শবে কদর নামে পরিচিত । লাইলাতুল কদর আরবি শব্দ এর বাংলা প্রতিশব্দ হলো মহিমান্বিত রাত । এছাড়াও এর অর্থ হল ভাগ্য পরিমাণ এবং তাকদীর নির্ধারণ করা । মহিমান্বিত রাত বলতে বোঝায় পবিত্র রজনী । ( ২০২৩ সালের শবে বরাত কত তারিখে )
ইসলামিক আলেম-ওলামাগণ রমজান মাসের শেষের দশদিনের বেজোড় রাতগুলোর যেকোনো এক রাতকে শবে কদর বলে বিবেচিত করে । রমজানের সেই বেজোড় রাত গুলো হতে পারে 21, 23, 25, 27, 29 । তবে আমাদের বাংলাদেশে 27 তম রোজার রাতকে শবে কদর পালন করা হয় । ( শবে কদর কত তারিখে 2023 )
2023 সালের প্রথম রোজা কবে ?
হিজরি সনের মাসগুলো চাঁদ দেখার উপর নির্ভরশীল যার কারণে আগে থেকে বলা সম্ভব হয় না যে 2023 সালের কোন মাসে রোজা শুরু হবে । অপরদিকে ইংরেজি মাসগুলোকে আগে থেকে বলা যায় কারণ এই মাসগুলো চাঁদ দেখার উপর নির্ভরশীল হয় না যার কারণে বিভিন্ন ক্যালেন্ডার এবং দিনপঞ্জিকার মাধ্যমে ইংরেজি সনকে নির্ধারিত করা যায় । ( 2023 সালের রোজা কবে )
হিজরি সনের মাসগুলো 29 থেকে 30 দিনের হয় যার কারণে 355 এবং 365 দিনের হয়ে থাকে বছরগুলো । অপরদিকে কিন্তু ইংরেজী মাসগুলোর 365 দিনের হয়ে থাকে । ( বাংলাদেশে রোজা কবে থেকে শুরু )
আর ঠিক এজন্য ইসলামিক উৎসব এবং ইবাদতের রাত গুলো 10 থেকে 11 দিন এগিয়়ে যায় বাঘ গরমিল হয়েে যায় । আর এজন্যই ক্যালেন্ডার এর মাধ্যমে অথবা ক্যালেন্ডার ফলো করে রমজান মাস কখন শুরু হবে এটা বলা যায়না । তবে আমাদের দেশে চাঁদ দেখা কমিটি রয়েছে যারা একটি ধারণার মাধ্যমে বলে দিতে পারে কখন রমজান শুরু হবে । ( ২০২৩ সালের রমজান মাস কবে )
এখন প্রশ্ন হলো 2023 সালের রমজান কবে থেকে শুরু হবে । পূর্ববর্তী বছরগুলোর দেখা যায় 2020 সালের রমজান 25 এপ্রিল শুরু হয়েছিল এবং 2021 সালের রোজা শুরু হয়েছিল 14 এপ্রিল । এখন আমরা বলতে পারি 2023 সালের রোজা মার্চ মাসেই শুরু হবে তবে কোন তারিখে শুরু হবে সেটা নির্ভর করবে চাঁদ দেখার উপর । ( ২০২৩ সালের রমজান কোন মাসে )
শাবান মাসের চাঁদ নতুন করে 1 এপ্রিল জন্ম নিবে । পহেলা এপ্রিল শাবান মাসের চাঁদ জন্ম নিলেও এটিকে পৃথিবী থেকে দেখা যাবে না যার কারণে পহেলা এপ্রিল 2023 রোজা শুরু হচ্ছে না এবং মার্চ মাস্ট পরবর্তী দিনে চাঁদের বয়স হবে একদিন 20 ঘন্টা । ( ২০২৩ সালের রোজার ঈদ কত তারিখে )
তখনো চাঁদ দেখা যাবে না । তবে মার্চ বাংলাদেশসহ উপমহাদেশ গুলোতে চাঁদ দেখা যাবে অর্থাৎ 2023 সালের প্রথম রমজান শুরু হবে । 23 মার্চ প্রথম রমজান শুরু হলে শবেবরাত অনুষ্ঠিত হবে মার্চ মাসের 8 কিংবা 9 তারিখে । ( রোজা আর কত দিন
আছে )
সুতরাং আল্লাহর নৈকট্য লাভের আশায় এবং সাওমের সামাজিক গুরুত্বের কথা বিবেচনা করে আমাদের সাওম পালন করা উচিত । আমরা নিষ্ঠা ও আন্তরিকতার সাথে সাওম পালন করব ইনশাল্লাহ । ( রমযানের ফজিলত )
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন